তিতাসে রাস্তার কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার, জনদুর্ভোগ চরমে

প্রকাশিত: ১০:২৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২১, ২০২৫
Oplus_16908288

মো: জুয়েল রানা, স্টাফ রিপোর্টার:
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি-মাছিমপুর সড়কের পাঙ্গাশিয়া হইতে বলরামপুরের তিন কিলোমিটার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার কাজ প্রায় এক বছর ধরে ফেলে রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা। যার ফলে বলরামপুর গ্রামের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ধুলাবালু ও ইট-পাথরের ঝাঁকুনিতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় বিছানো ইটের খোয়ার ধুলাবালিতে আচ্ছন্ন হয়ে আছে সড়কের পাশের বাড়িঘর, দোকানপাট ও গাছপালা। রাস্তাজুড়ে রয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ।

উপজেলা এলজিইডি অফিস সুত্রে জানা যায়, ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার পাকাকরনের কাজটি পায় ইয়াছিন এক্সপ্রেস ঠিকাদার কোম্পানি। ২০২১ সালের ২৬শে ফ্রেব্রুয়ারী কাজটি শুরু করে ২২ সালের জানুয়ারী মাসে কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে সংস্কার কাজ শুরু করায় টেন্ডার বাতিল করে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে রি-টেন্ডারে একই ঠিকাদার কোম্পানি কাজটি বাগিয়ে নিয়ে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের ১৩ তারিখে কাজ শুরু করে। কাজটি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও ম্যাকাডম করে লাপাত্তা হয়ে যায় ঠিকাদার।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায় প্রায় ৩০-৪০ হাজার লোকের বসবাস বলরামপুর গ্রামে। বিগত পঞ্চাশ বছর ধরে এই গ্রামের মানুষ অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত। গ্রাম থেকে বের হওয়ার এক মাত্র রাস্তা এটি, সময়ের পালা বদলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্তার উন্নয়ন হলেও উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি বলরামপুর গ্রাম। এমন ক্ষোভ প্রাকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুফ হোসেন। তিনি তার ফেসবুক একাউন্টে লিখেন, বলরামপুর গ্রামেরর উত্তর-দক্ষিণে বেষ্টিত প্রায় ৩০-৪০ হাজার মানুষের বসবাস।স্বাধীনতার পর থেকেই এই গ্রামটি রাস্তা-ঘাটের দিক থেকে বঞ্চিত। অথচ তিতাস সহ দেশের বিভিন্ন উপজেলায় ৪-৫ হাজার মানুষের বসবাস হয়েও এমন অনেক গ্রাম আছে রাস্তাঘাটে অনেক উন্নত! ঠিক কি কারণে গ্রামটি আজও উন্নয়ন বঞ্চিত এই গ্রামের নিরীহ বাসিন্দারা অবগত নন। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে রাস্তাটি দুইবার টেন্ডার সম্পূর্ণ করে কাজ শুরু করলেও বার বার কি এমন অদৃশ্য কারণে আটকে যায় তা এখন অত্র এলাকাবাসী সহ আশেপাশের মানুষের মুখে মুখে! সেই সাথে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ কাজ করছে। তিনি অত্র গ্রামের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে তিতাস উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও এলজিইডি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং এই রাস্তার কাজটি ঠিক কি কারনে বন্ধ হয়ে আছে? আদৌ রাস্তার কাজটি সম্পূর্ণ হবে কিনা হলেও কবে নাগাদ হবে এবং রাস্তার কাজটি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করার জোরালো দাবি জানান।
উত্তর বলরামপুরের রফিকুল ইসলাম ও দক্ষিণ বলরামপুরের হেলাল ভূঁইয়া বলেন, সড়কের কাজ শুরু দেখে ভাবলাম পথচারীদের কষ্টের দিন শেষ হবে, জনদূর্ভোগ লাগব হবে। এখন দেখছি আগের ভাঙ্গাচোরা রাস্তাই ভালো ছিল। এমন ধুলোবালি উড়ত না। প্রতিদিন এই পথদিয়ে যাতায়াত করার সময় ধুলাবালিতে শরীর মেখে যাচ্ছে ও জামা কাপড় নষ্ট হচ্ছে। স্কুলগামী ছাত্র ছাত্রীদের কষ্টের শেষ নেই, যাতায়াত করছে ঝুঁকিতে।
এবিষয়ে তিতাস উপজেলা প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, রাস্তার কাজ গত বছরের জুলাই মাসে শেষ করার কথা কিন্তু ম্যাকাডম কাজ সম্পন্ন করেও পাকাকরণ না করে আজ ৮ মাস যাবৎ কাজ বন্ধ রাখায় আমি উর্ধতন কতৃপক্ষের নিকট প্রস্তাব পাঠিয়েছি কাজটি বাতিল করে পুনরায় রি-টেন্ডার করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করার জন্য।